শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ, ১৪৩১
তথ্য-প্রযুক্তি ডেস্ক।।
রাজধানীর গুলশানের নিজ এলাকায় বখাটের উত্ত্যক্তকরণের শিকার হয়েছিল তাবাসসুম মেহনাজ (ছদ্মনাম)| আশপাশে কেউ না থাকায় চিৎকার করে সাহাঘ্যও চাইতে পারেননি তিনি| কিন্তু তার সঙ্গে ছিল বাঁচাও অ্যাপ| নিজের মোবাইলে থাকা বাঁচাও অ্যাপসে অ্যালার্ট বাটনে ক্লিক করার পর ছুটে আসেন বান্ধবী, তার ছোট ভাই ও আশপাশের মানুষজন| পরে তাদের সহায়তায় সেখান থেকে উদ্ধার হন তিনি|
শুধু গুলশান কিংবা বনানী নয়, দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে একজন নারী বাঁচাও অ্যাপস ব্যবহারের মাধ্যমে ধর্ষণ, উত্ত্যক্তকরণ থেকে রক্ষা পেতে পারেন| এর জন্য প্রয়োজন মোবাইলের প্লে স্টোর থেকে ‘বাঁচাও’ অ্যাপসটি ইনস্টল করে রাখার| পরে বিপদে পড়লেই অ্যাপটির ‘রেপ অ্যালার্ট’ বাটনে ক্লিক করলে সে বার্তা পৌঁছে যাবে আশপাশে ‘বাঁচাও’ ইনস্টল করে রাখা মানুষের স্মার্টফোনে| অ্যালার্ট এক জন নারীকে যে কেউ সহায়তা করতে আসতে পারে|
বাঁচাও ফাউন্ডেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান এ অ্যাপসটি নিয়ে এসেছে| গত অক্টোবরের ২ তারিখ অ্যাপটি ডাউনলোড করার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হলে এ পর্যন্ত দেড় লাখেরও বেশি মানুষ তা ডাউনলোড করেছে| এর মধ্যে ৫৫ শতাংশই ঢাকার বাসিন্দা এবং এর পরেই রয়েছেন চট্টগ্রামের বাসিন্দারা| বাঁচাও ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জালাল আহমেদ জানান, কোনো নারী যদি এমন পরিস্হিতিতে পড়েন, যা ধর্ষণের ঘটনায় মোড় নিতে পারে, তখন এই অ্যাপটির মাধ্যমে তিনি সহায়তা চাইতে পারবেন| নারীরা যাতে প্রয়োজনের সময়, বিশেষ করে ধর্ষণ থেকে নিজেদের রক্ষায় সহায়তা চাইতে পারে, সেজন্য ‘বাঁচাও’ নামে অ্যাপটি তৈরি করা হয়েছে| গত আগস্টে সীমিত আকারে অ্যাপটি চালু করা হয়| ২ অক্টোবর থেকে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়|
জালাল আহমেদ বলেন, ‘৮০ শতাংশ ধর্ষণের ঘটনাই নারীটির আশপাশের কোনো স্হানে ঘটে এবং সেটা তার আবাসস্হল থেকে বেশি দূরে হয় না| আমরা দেখেছি, একমাত্র সমাজের সবাই এগিয়ে এলেই ধর্ষণ ঠেকানো সম্ভব, কারণ তারাই দ্রুত ঘটনাস্হলে যেতে পারে|
এ অ্যাপস ব্যবহার করছেন এমন এক জন রুমাইয়া রাহীন| তিনি বলেন, অ্যাপটি নারীদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ| আমরা যখন কোনো আকস্মিক বিপদে পড়ে যাই তখন আশপাশের অপরিচিত মানুষজন এগিয়ে আসতে চায় না| কারণ তারা প্রয়োজন মনে করে না| কিন্তু অ্যাপটির মাধ্যমে আমি জানিয়ে দিতে পারি আমার সহযোগিতা প্রয়োজন| তিনি বলেন, এক দিন ১০ জন বখাটে আমার পিছু নিয়েছিল| আমার এখন মনে হয়, তখন যদি বাঁচাও থাকত|
বাংলাদেশে ধর্ষণের ঘটনা অর্ধেক কমিয়ে আনার লক্ষ্য রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা ২০২২ সালের জুলাই মাসের মধ্যে ধর্ষণের সংখ্যা দিনে ১৭ জন থেকে আট জনে নামিয়ে আনতে চাই| এটা ধর্ষণের বিরুদ্ধে একটা যুদ্ধ| আমরা ৬৪ জেলাতেই কাজ করছি এবং প্রতিটি গ্রামে পৌঁছানোর চেষ্টা করছি| ২০২২ সালের মধ্যে ধর্ষণের বিশ্ব র্যাংকিংয়েও বাংলাদেশের অবস্হানকে আমরা ওপরে তুলতে চাই|